03.10.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
রাবণের কায়দা হলো আসুরী মত, মিথ্যা বলা, বাবার কায়দা হলো শ্রীমৎ, সত্য বলা"
প্রশ্নঃ -
কোন্ বিষয়ের
কথা ভেবে বাচ্চাদের আশ্চর্য হওয়া উচিত?
উত্তরঃ
১ ) কেমন
ওয়ান্ডারফুল এই অসীম জগতের নাটক, যার ফিচার্স, যার অ্যাক্ট সেকেণ্ড বাই সেকেণ্ড
অতিক্রান্ত হচ্ছে, তা আবার হুবহু পুনরাবৃত্ত হবে । এ কেমন ওয়ান্ডার যে, একের
চরিত্র অন্যের সাথে মেলে না । ২ ) অসীম জগতের বাবা এসে কেমনভাবে সমগ্র বিশ্বের সদগতি
করান, পড়ান, এও এক ওয়ান্ডার ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের বাবা
শিব বসে তাঁর আত্মিক শালগ্রাম বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন, তিনি কি বোঝাচ্ছেন? তিনি
সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য বোঝান, আর এ বোঝানোর জন্য একমাত্র বাবা-ই আছেন,
আর যে সব আত্মারা অথবা শালগ্রাম আছে, তাদের নাম হলো শরীরের নাম । আর বাকি হলেন
একজনই, তিনি হলেন পরম আত্মা, যাঁর কোনো শরীর নেই । সেই পরম আত্মার নাম হলো শিব ।
তাঁকেই পতিত-পাবন পরমাত্মা বলা হয় । বাচ্চারা, তিনিই তোমাদের এই সম্পূর্ণ বিশ্বের
আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য বুঝিয়ে বলছেন । সকলেই তো পার্ট প্লে করার জন্য এখানে
আসে । তোমাদের এও বোঝানো হয়েছে যে, বিষ্ণুর দুটি রূপ । শঙ্করের তো কোনো পার্টই নেই
। এই সব কথা বাবা বসে বোঝান । বাবা কখন আসেন? তিনি আসেন যখন নতুন সৃষ্টির স্থাপনা
আর পুরানো সৃষ্টির বিনাশ হয় । বাচ্চারা জানে যে, নতুন দুনিয়াতে এক আদি সনাতন দেবী
দেবতা ধর্মের স্থাপনা হয় । এই স্থাপনা একমাত্র পরম পিতা পরমাত্মা ছাড়া আর কেউই করতে
পারে না । তিনিই একমাত্র পরম আত্মা, যাঁকে পরমাত্মা বলা হয় । তাঁর নাম হলো শিব ।
তাঁর শরীরের কোনো নাম হয় না । আর যারাই আছে তাদের সকলেরই শরীরের নাম হয় । তোমরা
এও বুঝতে পারো যে, মুখ্য মুখ্য যারা আছে, তারা সবাই এসে গেছে । এই ড্রামার চক্র
ঘুরতে ঘুরতে এখন অন্তে এসে পৌঁছেছে । এই অন্তিম সময়ে বাবাকেই প্রয়োজন । তাঁর
জয়ন্তীও পালন করা হয় । শিব জয়ন্তীও এই সময় পালন করা হয় যখন দুনিয়ার পরিবর্তনের
প্রয়োজন । ঘোর অন্ধকার থেকে অতি প্রকাশের আলোর উদয় হয় অর্থাৎ দুঃখধাম থেকে সুখধাম
হতে হবে । বাচ্চারা জানে যে পরম পিতা পরমাত্মা শিব একইবার পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে
আসেন, পুরানো দুনিয়ার বিনাশ আর নতুন দুনিয়ার স্থাপনা করতে । প্রথমে নতুন দুনিয়ার
স্থাপনা এবং পরে পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হয় । বাচ্চারা বুঝতে পারে যে, এই পড়া করে
আমাদের হুঁশিয়ার হতে হবে, আর দৈবী গুণও ধারণ করতে হবে । আসুরী গুণের পরিবর্তন করতে
হবে । দৈবী গুণ আর আসুরী গুণের বর্ণনা চার্টে দেখানো আছে । নিজেকে দেখতে হবে, আমরা
কাউকে বিরক্ত করছি না তো? মিথ্যা বলছি না তো? শ্রীমতের বিপরীতে চলি না তো? মিথ্যা
বলা, কাউকে দুঃখ দেওয়া, বিরক্ত করা - এ হলো রাবণের কায়দা, আর এর বিপরীতে অন্যটি হলো
রামের কায়দা । শ্রীমৎ আর আসুরী মত ফলাও হয়ে থাকে । অর্ধেক কল্প আসুরী মত চলে, যাতে
মানুষ অসুর, দুঃখী আর রোগী হয়ে যায় । পাঁচ বিকারের প্রবেশ হয় । বাবা এসে শ্রীমত
প্রদান করেন । বাচ্চারা জানে যে, শ্রীমতে আমরা দৈবী গুণ অর্জন করি । এই আসুরী গুণের
পরিবর্তন করতে হবে । এই আসুরী গুণ যদি থেকে যায়, তাহলে পদ কম হয়ে যাবে । তোমাদের
জন্ম - জন্মান্তরের যে পাপের বোঝা মাথার উপর আছে, পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে তা
হালকা হয়ে যাবে । তোমরা এ কথাও জানো যে, এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । তোমরা বাবার
দ্বারা এখন দৈবী গুণ ধারণ করে নতুন দুনিয়ার মালিক হও । তাই এ কথা সিদ্ধ যে পুরানো
দুনিয়া অবশ্যই শেষ হতে হবে । এই ব্রহ্মাকুমার - কুমারীদের দ্বারাই নতুন দুনিয়ার
স্থাপনা হবে । এ কথা সম্পূর্ণ নিশ্চিত তাই সকলেই এই সেবায় যুক্ত আছে । তারা কারোর
না কারোর কল্যাণ করার পরিশ্রম করতে থাকে ।
তোমরা জানো যে,
আমাদের ভাই - বোনেরা কতো সেবা করে । তারা সবাইকে বাবার পরিচয় দিতে থাকে । বাবা
এসেছেন যখন, তখন প্রথমে তো খুব অল্প জনই পরিচয় পাবে । তারপর বৃদ্ধি পেতে থাকবে । এক
ব্রহ্মার দ্বারা কতো ব্রহ্মাকুমার তৈরী হয় । ব্রাহ্মণ কুল তো অবশ্যই প্রয়োজন, তাই
না । তোমরা জানো যে, আমরা সকল ব্রহ্মাকুমার - কুমারীরা শিববাবার সন্তান, সকলেই ভাই
- ভাই । প্রকৃতপক্ষে সকলেই ভাই - ভাই, তারপর প্রজাপিতা ব্রহ্মার হওয়ার কারণে ভাই -
বোন হয়ে যায় । এরপর যখন দেবতা কুলে যাবে তখন সম্বন্ধের বৃদ্ধি পেতে থাকবে । এই
সময় সবাই ব্রহ্মার সন্তান হলো, তাই সকলে একই কুলের হলো, একে কিন্তু ডিনায়েস্টি (সাম্রাজ্য)
বলা যাবে না । রাজত্ব না কৌরবদের আর না পাণ্ডবদের । ডিনায়েস্টি তখনই হয় যখন নম্বর
অনুসারে রাজা - রানী সিংহাসনে বসেন । এখন তো হলোই প্রজার উপর প্রজার রাজত্ব । শুরু
থেকে পবিত্র সাম্রাজ্য আর অপবিত্র সাম্রাজ্য চলে আসছে । বাচ্চারা জানে যে পাঁচ
হাজার বছর পূর্বে ভারতে স্বর্গ ছিলো, তো তখন এখানে পবিত্র ডিনায়েস্টি ছিলো । তার
চিত্রও আছে, তখনকার মন্দির কতো ঐশ্বর্যমন্ডিত ছিলো । আর কারোরই মন্দির নেই । এই
দেবতাদেরই অনেক মন্দির রয়েছে ।
বাচ্চাদের বোঝানো
হয়েছে যে, আর সকলেরই শরীরের নামের পরিবর্তন হয় । এঁনার নাম শিব, তা চলেই আসছে ।
শিব ভগবানুবাচঃ কোনো দেহধারীকেই ভগবান বলা হয় না । একমাত্র বাবা ছাড়া আর কেউই
বাবার পরিচয় দিতে পারে না, কেননা কেউই বাবাকে জানেই না । এখানেও এমন অনেকেই আছে
যাদের বুদ্ধিতে আসেই না যে, কিভাবে বাবাকে স্মরণ করবে । তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায়
। তারা ভাবে, এতো ছোটো বিন্দু, তাঁকে কিভাবে স্মরণ করবো । শরীর তো বড় তাই তাঁকেই
স্মরণ করতে থাকে । এমন গায়নও আছে যে, ভ্রুকুটির মধ্যে ঝলমলে তারা অর্থাৎ আত্মা হলো
তারার মতো । আত্মাকে শালগ্রাম বলা হয় । শিবলিঙ্গেরও বড় রূপে পুজো হয় । আত্মাকে
যেমন দেখা যায় না তেমনই শিববাবাকেও দেখা যায় না । ভক্তিমার্গে বিন্দুর পুজা কিভাবে
করবে কেননা প্রথম প্রথম শিববাবার অব্যভিচারী পুজা শুরু হয়ে যায়, তাই না । তাই
পুজোর জন্য অবশ্যই বড় জিনিসের প্রয়োজন । শালগ্রামও বড় ডিমের মতো বানানো হয় । একদিকে
বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের মতো বলতে থাকে আবার তারার মতোও বলতে থাকে । তোমাদের তো এখন একটি
বিষয়েই স্থির হতে হবে । অর্ধেক কল্প তোমরা বড় জিনিসের পুজো করেছো । এখন তাঁকে বিন্দু
মনে করা, এতে পরিশ্রম, তোমরা তো দেখতেও পাও না । এ কথা বুদ্ধির দ্বারা জানতে পারা
যায় । আত্মা শরীরে প্রবেশ করে আবার নির্গত হয়েও যায়, কেউ তো তা দেখতে পারে না ।
বড় জিনিস হলে তা দেখা যায় । বাবাও এমনই বিন্দু, কিন্তু তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, আর
কাউকেই জ্ঞানের সাগর বলা হবে না । শাস্ত্র তো হলো ভক্তিমার্গের । এতো সব বেদ
শাস্ত্র ইত্যাদি কে বানিয়েছে? মানুষ বলে ব্যসদেব বানিয়েছেন । খ্রাইস্টের আত্মা কোনো
শাস্ত্র বানায়নি । এ তো পরে মানুষ বসে বানায় । তাদের মধ্যে তো এই জ্ঞান নেই ।
জ্ঞানের সাগর হলেন একমাত্র বাবা । শাস্ত্রে জ্ঞানের কথা বা সদগতির কোনো কথা নেই ।
প্রত্যেক ধর্মের মানুষ তাদের নিজের ধর্মস্থাপকদের স্মরণ করে । তারা দেহধারীদের
স্মরণ করে । খ্রাইস্টের তো চিত্র আছে, তাই না । সকলেরই চিত্র আছে । শিববাবা তো
হলেনই পরম আত্মা । তোমরা এখন বুঝতে পারো, আত্মারা সকলেই ভাই - ভাই । ভাইদের মধ্যে
জ্ঞান থাকতে পারে না যে কাউকে জ্ঞান দান করে সদগতি করাতে পারে । সদগতি করান একমাত্র
বাবা । এই সময় যেমন ভাইরাও আছে তেমনি বাবাও আছেন । বাবা এসেই সম্পূর্ণ বিশ্বের
আত্মাদের সদগতি করান । বিশ্বের সদগতিদাতা হলেন একজনই । শ্রী শ্রী ১০৮ জগৎগুরু বলো
অথবা বিশ্বের গুরু বলো, একই কথা হলো । এখন তো হলো আসুরী রাজ্য । এই সঙ্গম যুগেই বাবা
এসে এইসব কথা বুঝিয়ে বলেন ।
তোমরা জানো যে,
নিশ্চিত ভাবেই এখন নতুন দুনিয়ার স্থাপনা হচ্ছে আর পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হবে । এও
তোমাদের বোঝানো হয়েছে যে, পতিত পাবন হলেন একমাত্রই নিরাকার বাবা । কোনো দেহধারীই
পতিত পাবন হতে পারে না । পতিত পাবন হলেন পরমাত্মাই । যদি পতিত পাবন সীতারামও বলা হয়,
তবুও বাবা বুঝিয়েছেন যে, ভক্তির ফল প্রদান করতে ভগবানই আসেন । তাই সব সীতারাই তার
পত্নী হলো আর পতি হলেন এক রাম, যিনি সকলেরই সদগতি দাতা । এই সব কথা বাবা বসেই বোঝান
। ড্রামা অনুসারে পাঁচ হাজার বছর পরে তোমরা আবার এই কথা শুনবে । এখন তোমরা সকলেই
পাঠ গ্রহণ করছো । স্কুলে কতজন পড়াশোনা করে । এইসব নাটক বানানো আছে । যেই সময় তোমরা
যা পড়ো, যে অভিনয় চলতে থাকে, আবার পরের কল্পে তার পুনরাবৃত্তি হবে, পাঁচ হাজার বছর
পরে তোমরা আবার এই পড়া পড়বে । এই অনাদি নাটক বানানো আছে । যাই দেখবে সেকেণ্ড বাই
সেকেণ্ড নতুন জিনিস দেখতে পাবে । এই চক্র ঘুরতে থাকবে । তোমরা নতুন নতুন বিষয় দেখতে
থাকবে । তোমরা এখনো জানো যে, এ হলো পাঁচ হাজার বছরের ড্রামা যা চলতেই থাকছে । এর
ডিটেল তো অনেকই । মুখ্য - মুখ্য বিষয়ই বুঝিয়ে বলা হয় । যেমন বলা হয়, পরমাত্মা
সর্বব্যাপী, বাবা বোঝান যে, আমি সর্বব্যাপী নই । বাবা এসে নিজের আর এই রচনার আদি -
মধ্য এবং অন্তের পরিচয় দেন । তোমরা এখন জানো যে, বাবা প্রতি কল্পে - কল্পে আমাদের
অবিনাশী উত্তরাধিকার দিতে আসেন । এমন মহিমাও আছে যে, ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা । এটা
খুব সুন্দর ভাবে বোঝানো আছে । বিরাট রূপেরও তো অর্থ থাকবে, তাই না, কিন্তু বাবা ছাড়া
এই কথা কেউই বোঝাতে পারবেন না । চিত্র তো অনেকই আছে কিন্তু একটিও বোঝার মতো ক্ষমতা
কারোর কাছেই নেই । উঁচুর থেকে উঁচু হলেন শিববাবা, তাঁরও চিত্র আছে কিন্তু কেউই তাঁকে
জানতে পারে না । আচ্ছা, এরপরে সূক্ষ্ম বতন আছে, তাকে না হয় ছেড়ে দাও, তার দরকার
নেই । এখানকার হিস্ট্রি - জিওগ্রাফিই বোঝার, ওটা তো হলো সাক্ষাৎকারের বিষয়। এখানে
যেমন এনার মধ্যে বাবা বসে বোঝান, তেমনই সূক্ষ্ম বতনে এনার কর্মাতীত শরীরে মিলিত হন
অথবা বলেন । বাকি ওখানে তো এই পৃথিবীর হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি নেইই । হিস্ট্রি -
জিওগ্রাফি হলো এখানের । বাচ্চাদের বুদ্ধিতে বসে গেছে যে, সত্যযুগে যে দেবী - দেবতারা
ছিলেন তাঁদের পাঁচ হাজার বছর হয়ে গেছে । এই আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের স্থাপনা
কিভাবে হয়েছিলো - এও কেউ জানে না । আর অন্য ধর্মের স্থাপনার বিষয়ে তো সবাই জানে ।
সেই সম্বন্ধে বই ইত্যাদি অনেকই আছে । এ তো লাখ বছরের কথা হতেই পারে না । এ তো
সম্পূর্ণ ভুলকিন্তু মানুষের বুদ্ধি কোনো কাজই করে না । বাবা সমস্ত বিষয়ই বুঝিয়ে
বলেন - মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা খুব ভালোভাবে ধারণ করো । মূখ্য বিষয় হলো
বাবাকে স্মরণ । এ হলো স্মরণের দৌড় । কেউ একা একা দৌড়ায় । কেউ আবার একত্রে জোড়া বেঁধে
দৌড়ায় । এখানে যে জোড়া আছে তারা একত্রে দৌড় লাগানোর অভ্যাস করে । তাঁরা মনে করে
সত্যযুগেও এমনই একত্রে জোড়ি হয়ে যাবে । যদিও নাম রূপের পরিবর্তন হয়ে যায়, ওই
শরীর তো আর পাওয়াই যায় না । শরীরের তো পরিবর্তন হয় । তারা বুঝতে পারে, আত্মা এক
শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে । চেহারা তো আলাদাই হবে, কিন্তু বাচ্চাদের
আশ্চর্য হওয়া উচিত যে, যে চেহারা, যে অ্যাক্ট সেকেণ্ড বাই সেকেণ্ড অতীত হয়ে যাচ্ছে
তা আবার ৫ হাজার বছর পরে হুবহু রিপিট হবে । কতো ওয়ান্ডারফুল নাটক, আর কেউই তা
বোঝাতে পারে না । তোমরা জানো যে, আমরা সবাই পুরুষার্থ করছি । নম্বরের ক্রমানুসারে
আমরা তো তৈরী হবোই । সকলেই তো আর কৃষ্ণ হবে না । সকলের ফিচার্স ডিফারেন্ট হবে । কতো
বড় ওয়ান্ডারফুল নাটক এটা। একের ফিচার অন্যের সাথে মেলে না । হুবহু এই খেলাই রিপিট
হয়ে থাকে । এই সব কথা ভাবলে আশ্চর্য হতে হয় । অসীম জগতের বাবা এসে কিভাবে আমাদের
পড়ান । জন্ম - জন্মান্তর তো আমরা ভক্তিমার্গের শাস্ত্র পড়ে এসেছি, সাধুসন্তদের কথা
ইত্যাদিও শুনে এসেছি । বাবা এখন বলছেন, ভক্তির সময় সম্পূর্ণ হয়েছে । এখন ভক্তরা
ভগবানের কাছে ফল পাবে । তারা এইকথা জানে না যে, ভগবান কখন কোন্ রূপে আসবেন? তারা
কখনো বলে, শাস্ত্র পাঠ করলে ভগবানকে পাওয়া যাবে, আবার কখনো বলে ভগবান এখানে আসবে ।
শাস্ত্রেই যদি কাজ হয়ে যায়, তাহলে বাবাকে কেন আসতে হয়? শাস্ত্র পড়লেই যদি ভগবান
লাভ সম্ভব হয় তাহলে এসে আর কি করবেন? অর্ধেক কল্প তোমরা এই শাস্ত্র পড়তে পড়তে
তমোপ্রধানই হয়ে গেছো । তাই আমি বাচ্চাদের সৃষ্টি চক্রও বোঝাতে থাকি আর তোমাদের দৈবী
চলনও চাই । এক তো তোমরা কাউকেই দুঃখ দেবে না । এমন নয় যে, কেউ বিষ চাইলো, তা না
দিলে কাউকে দুঃখ দেওয়া হবে । বাবা তো এমন বলেন না । এমনও আবার বুদ্ধু রয়েছে যে বলে,
বাবা তো বলেন যে, কাউকে দুঃখ দেওয়া উচিত নয় । এখন এ যদি বিষ চায়, তাহলে একে দেওয়া
উচিত, না হলে এও কাউকে দুঃখ দেওয়াই হলো, তাই না । এমন যারা ভাবে তারা মূঢ়মতি । বাবা
তো বলেন, "তোমাদের অবশ্যই পবিত্র হতে হবে ।" আসুরী চলন (আচার-আচরণ) আর দৈবী চলনের
তফাৎ বোঝার প্রয়োজন । মানুষ তো এও বোঝে না, তারা বলে দেয়, আত্মা নির্লিপ্ত । যা
কিছুই করো, যা কিছুই খাও বা পান করো, বিকারে যাও, কোনো ক্ষতি নেই । এমনও অনেকে
শেখায় । কতো মানুষ ধরে নিয়ে আসে । এখানে বাইরেরও অনেকেই নিরামিষাশী থাকে । নিশ্চই
ভালো, তাই তো তারা নিরামিষাশী হয় । সব জাতির মধ্যেই বৈষ্ণব থাকে । তারা ছিঃ - ছিঃ
জিনিস খায় না । তারা সংখ্যায় কম । তোমরাও কম সংখ্যক । এই সময় তোমরা কতো অল্প ।
আস্তে আস্তে তোমরা বৃদ্ধি পেতে থাকবে । বাচ্চারা এই শিক্ষা পায় যে - দৈবী গুণ ধারণ
করো । অন্যের হাতে তৈরী কোনো ছিঃ - ছিঃ বস্তু খাওয়া উচিত নয় । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের চার্টে দেখতে হবে -- ক ) আমি শ্রীমতের বিপরীতে চলছি না তো ? খ ) মিথ্যা বলি
না তো ? গ ) কাউকে বিরক্ত করি না তো ? ঘ ) দৈবী গুণ ধারণ করেছি ?
২ ) এই ঈশ্বরীয়
পাঠের সাথে সাথে দৈবী চলন ধারণ করতে হবে । "অবশ্যই পবিত্র হতে হবে ।" কোনো ছিঃ -
ছিঃ বস্তু খাবে না । সম্পূর্ণ বৈষ্ণব হতে হবে । স্মরণের দৌড় লাগাতে হবে ।
বরদান:-
বাবার
নির্দেশে বুদ্ধিকে খালি রেখে ব্যর্থ বা বিকারী স্বপ্ন থেকেও মুক্ত ভব
বাবার নির্দেশ হলো
শোওয়ার সময় সর্বদা নিজের বু্দ্ধিকে ক্লিয়ার করো, ভালো খারাপ সব বাবাকে দিয়ে
বুদ্ধিকে খালি করো। বাবাকে দিয়ে বাবার সাথে শুয়ে পড়ো। একা-একা শোবে না। একা ঘুমাতে
যাও বা ব্যর্থ কথাগুলিকে বর্ণনা করতে করতে ঘুমাতে যাও বলেই ব্যর্থ বা বিকারী স্বপ্ন
আসে। এটাও হলো অমনোযোগিতা । এই অমনোযোগিতাকে ত্যাগ করে বাবার নির্দেশে চলো, তবে
ব্যর্থ বা বিকারী সংকল্প থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
সৌভাগ্যবান আত্মারাই সত্যিকারের সেবার দ্বারা সকলের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করে।
Comments
Post a Comment