02.07.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা ‐
তোমরা এখানে স্মরণে থেকে তোমাদের পাপ দগ্ধ করার জন্য এসেছো, সেইজন্য বুদ্ধিযোগ যেন
নিষ্ফল (ব্যর্থ) না হয়ে যায়, এই বিষয়ে সম্পূর্ণ মনোযোগী হতে হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ সূক্ষ্ম
বিকারও অন্তিমে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে?
উত্তরঃ
যদি সূক্ষ্ম
রূপেও কোনও লোভ বা লালসার বিকার থাকে, কোনও কিছু লোভের বশবর্তী হয়ে একত্রিত করে যদি
নিজের কাছে সঞ্চিত করে রেখে দাও, তবে সেটাই অন্তিমে স্মরণে আসবে এবং বিঘ্ন সৃষ্টি
করবে । সেইজন্যই বাবা বলেন ‐ বাচ্চারা, নিজের কাছে কিছুই রেখো না । তোমাদের সকল
সংকল্পকে গুটিয়ে নিয়ে বাবাকে স্মরণ করার অভ্যাস করতে হবে, সেইজন্য দেহী-অভিমানী
হওয়ার অভ্যাস করো ।
ওম্ শান্তি ।
বাবা
বাচ্চাদের প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন ‐ দেহী-অভিমানী হও, কেননা বুদ্ধি
এদিকে-ওদিকে ছুটে বেড়ায় । অজ্ঞান কালে যখন ধর্মীয় গল্পকথা শুনতে তখনও বুদ্ধি বাইরে
ছুটে বেড়াতো, এখানেও বুদ্ধি বিভ্রান্ত হয়ে ছুটে বেড়ায়। সেইজন্যই বাবা রোজ রোজ বলেন
দেহী-অভিমানী হও । তারা ( লৌকিক ধর্ম গুরু) তো বলবে আমরা যা শোনাচ্ছি তার প্রতি
মনোযোগী হও, ধারণ করো । শাস্ত্র যা শোনাচ্ছে সেই বিষয় মনে রাখো । এখানে তো বাবা বসে
আত্মাদের বোঝাচ্ছেন, তোমরা সব স্টুডেন্টসরা দেহী-অভিমানী হয়ে বসো । শিববাবা আসেন
ঈশ্বরীয় পাঠ পড়াতে। এমন কোনও কলেজ নেই যেখানে মনে করবে শিববাবা শিক্ষা প্রদান করতে
আসেন । পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে এমন স্কুল অবশ্যই হওয়া উচিত । তোমরা স্টুডেন্টরা এখানে
বসে আছো আর এটাও বুঝেছো যে পরমপিতা পরমাত্মা আসেন আমাদের ঈশ্বরীয় পাঠ পড়াতে ।
শিববাবা আমাদের পড়ান । সর্বপ্রথম তিনি বোঝান তোমাদের পবিত্র হতে হবে, সুতরাং মামেকম্
স্মরণ করো। কিন্তু মায়া প্রতি মুহূর্তে ভুল করিয়ে দেয়। সেইজন্যই বাবা সতর্ক করে দেন
। কাউকে বোঝাতে হলেও সর্বপ্রথমে ব্যাখ্যা করো যে ভগবান কে? ভগবান তিনিই যিনি
পতিত-পাবন দুঃখ হরণকারী, সুখ প্রদানকারী, তিনি কোথায়? ওঁনাকে তো সবাই স্মরণ করে ।
যখন কোনও বিপদ আসে, তাঁকে ডাকে আর বলে - হে ভগবান দয়া করো । কারো প্রাণ রক্ষা করতেও
বলে ওঠে হে ভগবান, ও গডফাদার দুঃখ থেকে মুক্তি দাও । দুঃখ তো সবার । এটা তো নিশ্চিত
রূপে জানা আছে যে সত্যযুগকে সুখধাম বলা হয়, কলিযুগকে দুঃখ ধাম বলা হয় । এটা বাচ্চারা
জানে, তবুও মায়া এসে বিস্মৃতি ঘটায় । স্মরণে বসার নিয়মও ড্রামায় আছে। কেননা অনেকেই
আছে যারা সারাদিনেও স্মরণ করে না, এক মিনিটও স্মরণ করে না। সেইজন্য তাদের স্মরণ
করিয়ে দিতে এখানে বসানো হয় । স্মরণ করার যুক্তি (উপায়) বলে দিলে ওরাও নিশ্চিত হয়ে
যাবে । বাবাকে স্মরণ করার মাধ্যমেই আমাদের সতোপ্রধান হতে হবে । সতোপ্রধান হওয়ার
জন্য বাবা ফার্স্ট ক্লাস রিয়েল যুক্তি বলে দিয়েছেন। পতিত-পাবন তো একজনই, তিনিই এসে
উপায় বলে দেন । এখানে তোমরা বাচ্চারা শান্তিপূর্ণভাবে তখনই বসতে পারো যখন বাবার সাথে
যোগযুক্ত হও । যদি বুদ্ধিযোগ এখানে-ওখানে ছুটে বেড়ায় তবে সে শান্ত নেই, অশান্ত হয়ে
আছে। যত সময় বুদ্ধিযোগ এখানে-ওখানে ছুটে বেড়িয়েছে, সময় নিষ্ফল হয়ে গেছে। কেননা পাপ
তো কাটেনি । দুনিয়াতে এও জানে না যে, পাপ বিনষ্ট হয় কীভাবে । এ অতি সূক্ষ্ম বিষয় ।বাবা
বলেন আমার স্মরণে বসো, যতক্ষণ স্মরণের তার জুড়ে থাকবে, ততটুকু সময় সফল। ক্ষণিকের
জন্যও যদি বুদ্ধি এদিকে-ওদিকে বিভ্রান্ত হয়, তবে সময় ব্যর্থ হলো, নিষ্ফল হলো ।
বাবার ডায়রেকশন - বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করো। যদি স্মরণ না করো তবে নিষ্ফল হলে । এতে
কীহবে? তোমরা শীঘ্র সতোপ্রধান হতে পারবে না। তারপর এটাই অভ্যাসে পরিণত হবে । এটাই
চলতে থাকবে । আত্মা এই জন্মের পাপকে তো জানে । যতই কেউ বলুক না কেন আমার স্মরণে নেই,
কিন্তু বাবা বলেন ৩-৪ বছর বয়স থেকে সব কথা মনে থাকে । প্রারম্ভিক অবস্থায় এতো পাপ
হয় না, যতটা পরে হয় । প্রতিদিন একটু-একটু করে ক্রিমিনাল আই হতে থাকে, ত্রেতাতে দুই
কলা হ্রাস পায় । চন্দ্রের দুই কলা কম হতে কতদিন সময় লাগে । ধীরে ধীরে কম হতে থাকে
তারপর আবার ১৬ কলা সম্পূর্ণ চন্দ্রও বলা হয়, সূর্যের জন্য একথা বলা হয় না ।
চন্দ্রের জন্য এই সময়কাল হলো এক মাসের, আর এ হলো কল্পের বিষয় । প্রতিদিন একটু একটু
করে নীচে নামতে থাকে, তারপর আবার স্মরণের যাত্রার দ্বারাই উত্তরণের পথে উঠতে পারে।
তারপর তো ওঠার জন্য স্মরণের কোনও প্রয়োজনই পড়ে না । সত্যযুগের পরে আবারও নীচে নামতে
হবে ।সত্যযুগে যদি স্মরণ করে তবে তো নীচে নামতেই হবে না । ড্রামানুসারে নীচে নামতেই
হবে, সুতরাং স্মরণও করে না। নীচে নামতেই হবে। তারপর স্মরণ করার উপায়ও বাবা এসে বলে
দেন, কেননা উপরে উঠতে হবে । সঙ্গমযুগে এসেই বাবা শেখান যে, এবার উত্তরণের (উপরে ওঠা)
কলা শুরু হবে । আমাদের আবারও নিজের সুখধামে ফিরতে হবে । বাবা বলেন এখন সুখধামে যেতে
হলে আমাকে স্মরণ করো । স্মরণের দ্বারাই তোমাদের আত্মা সতোপ্রধান হয়ে উঠবে ।
তোমরা এই দুনিয়ার থেকে
নিরালা। বৈকুন্ঠও এই দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ আলাদা । বৈকুন্ঠ (স্বর্গ) ছিল, এখন নেই ।
ওরা কল্পের সময়সীমা দীর্ঘ করে দেওয়ার জন্য ভুলে গেছে । এখন তোমরা বাচ্চারা বৈকুন্ঠকে
খুব কাছেই প্রত্যক্ষ করতে পারছো । অল্প সময় বাকী, স্মরণের যাত্রাতেই ঘাটতি থাকার
জন্য মনে করে যে এখনও সময় আছে । স্মরণের যাত্রা যত তীব্র হওয়া প্রয়োজন ততটা হচ্ছে
না । তোমরা ড্রামার প্ল্যান অনুসারে ঈশ্বরীয় বার্তা (পয়গাম) পৌছে দাও, কাউকে
ঈশ্বরীয় বার্তা পৌঁছে না দেওয়া অর্থাৎ সার্ভিস না করা। সম্পূর্ণ বিশ্বে বার্তা পৌঁছে
দিতে হবে যে, বাবা বলেছেন - "মামেকম্ স্মরণ করো" । যারা গীতা পাঠ করে তারা জানে,
শাস্ত্র একটাই - গীতা, যার মধ্যে এই মহাবাক্য আছে। কিন্তু গীতার মধ্যে কৃষ্ণ
ভগবানুবাচ লিখিত আছে সুতরাং স্মরণ কাকে করবে ! যদিও শিবের ভক্তি করে, কিন্তু যথার্থ
জ্ঞান নেই যে শ্রীমতে চলবে। এই সময় তোমরা ঈশ্বরীয় মত প্রাপ্ত করে থাকো, এর আগে ছিল
মনুষ্য মত । দুটোর মধ্যে দিন-রাতের প্রভেদ । মনুষ্য মত বলে ঈশ্বর সর্বব্যাপী ।
ঈশ্বরীয় মত বলে - না । বাবা বলেন আমি আসি স্বর্গ স্থাপনা করতে, সুতরাং এটা নিশ্চয়ই
নরক। এখানে ৫ বিকার রূপী ভূত সবার মধ্যে প্রবেশ করেছে । বিকারী দুনিয়া বলেই তো আমি
আসি নির্বিকারী করে তুলতে । যে ঈশ্বরীয় সন্তান হয়েছে, তার মধ্যে বিকার তো থাকতেই
পারে না। রাবণের ১০ মাথা দেখানো হয়েছে । কখনও কেউ বলতে পারবে না যে, রাবণের সৃষ্টি
হলো নির্বিকারী। তোমরা জানো যে এখন হলো রাবণ রাজ্য। সবার মধ্যে ৫ বিকার আছে ।
সত্যযুগে রাম রাজ্য, সেখানে কোনও বিকার নেই। এই সময় মানুষ কত দুঃখী। শরীরে কত কষ্ট,
এ হলো দুঃখ ধাম, সুখধামে তো শারীরিক কষ্ট থাকেই না । এখানে হাসপাতালে ভরে গেছে, একে
স্বর্গ বলা মস্ত বড় ভুল । নিজে বুঝে অন্যদেরও বোঝাতে হবে, লৌকিক পড়াশোনা কাউকে
বোঝানোর জন্য নয় । পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই চাকরি হয়ে যায় । এখানে তো তোমাদের সবাইকে
ঈশ্বরীয় বার্তা পৌঁছে দিতে হবে । শুধুমাত্র বাবাই তো আর এই বার্তা পৌঁছে দেবেন না ।
যে খুব চৌখস হয় তাকে টিচার বলা হয় । কম চৌখস যারা, তাদের স্টুডেন্ট বলা হয় ।
তোমাদের সবার কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে হবে, জিজ্ঞাসা করতে হবে যে ভগবান কে জানো? উনি
তো সবার পিতা। প্রধান বিষয় হলো বাবার পরিচয় দেওয়া, কেননা কেউ-ই জানে না । উচ্চ থেকে
উচ্চতর হলেন বাবা। সম্পূর্ণ বিশ্বকে যিনি পবিত্র করে তোলেন। সম্পূর্ণ বিশ্ব পবিত্র
ছিল, তার মধ্যে ভারতই ছিল। আর কোনো ধর্মাবলম্বী বলতে পারবে না যে, আমরা নতুন
দুনিয়াতে এসেছি। ওরা তো বুঝেছে আমাদের আসার আগে আরও কেউ এসে চলে গেছে। খ্রাইস্টও
নিশ্চয়ই কারো মধ্যে প্রবেশ করবে। ওনার আগে নিশ্চয়ই অন্য কেউ ছিল । বাবা বসে বোঝান
আমি এই ব্রহ্মা শরীরে প্রবেশ করি, এটাও কেউ মানতে নারাজ যে ব্রহ্মা শরীরে তিনি আসেন
। আরে, ব্রাহ্মণ তো অবশ্যই প্রয়োজন, ব্রাহ্মণ কোথা থেকে আসবে । ব্রহ্মার কাছ থেকেই
আসবে, তাইনা ! আচ্ছা, ব্রহ্মার পিতা একথা কখনও কি শুনেছো? তিনি হলেন গ্রেট গ্রেট
গ্র্যান্ড ফাদার । ওঁনার সাকার পিতা কেউ নেই । ব্রহ্মার সাকার পিতা কে? কেউ বলতে
পারবে না। ব্রহ্মা তো প্রখ্যাত । প্রজাপিতা ব্রহ্মা । যেমন নিরাকার শিববাবা বলা হয়,
ওঁনার পিতা কে? সাকার প্রজাপিতা ব্রহ্মার পিতা কে বলো । শিববাবাকে তো অ্যাডপ্ট করা
হয় না, ব্রহ্মাকে অ্যাডপ্ট করা হয় । বলা হয় এনাকে (ব্রহ্মা বাবা) শিববাবা অ্যাডপ্ট
করেছেন । বিষ্ণুকে শিববাবা অ্যাডপ্ট করেছেন এমনটা বলবে না । এটা তো তোমরা জানো যে
ব্রহ্মাই বিষ্ণু হন। বিষ্ণুকে অ্যাডপ্ট করা হয় না। শঙ্করের জন্যও বলা হয়েছে, ওনার
কোনও পার্ট নেই। ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু, বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা এটাই ৮৪ জন্মের চক্র।
শঙ্কর কোথা থেকে এসেছে। ওনার রচনা কোথায়। বাবারই রচনা, উনিই সব আত্মাদের পিতা আর
ব্রহ্মার রচনা সব মনুষ্য । শঙ্করের রচনা কোথায় আছে? শঙ্করের দ্বারা কোনও মনুষ্য
দুনিয়া রচিত হয় না। বাবা এসে এইসব বিষয়ে বুঝিয়ে বলেন, তারপরও বাচ্চারা প্রতি
মুহূর্তে ভুলে যায় । প্রত্যেকের বুদ্ধি নম্বরনুসারে হয়, তাইনা ! বুদ্ধি যত তীক্ষ্ম
হবে ততই টিচারের পাঠ ধারণ করতে সক্ষম হবে, এ হলো অসীম জগতের পড়াশোনা । পড়া অনুসারে
নম্বরানুযায়ী পদ প্রাপ্তি হবে । যদিও পাঠ একটাই মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার কিন্তু
রাজধানী স্থাপন হয় না ! এটাও বুদ্ধিতে ধারণা হওয়া উচিত যে, আমি কোন্ পদ প্রাপ্ত করবো?
রাজা হওয়া তো পরিশ্রমের কাজ। রাজার দাস-দাসীরও প্রয়োজন । দাস-দাসী কে হবে, এটাও
তোমরা বুঝতে পারো। নম্বরানুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী প্রত্যেকেই দাসী পাবে। সুতরাং
এমন পড়াশোনা করা উচিত নয় যে, জন্ম-জন্মান্তর ধরে দাসী হবে। পুরুষার্থ করতে হবে
উচ্চ পদ প্রাপ্ত করার জন্য।
সুতরাং সত্যিকারের
শান্তি রয়েছে বাবার স্মরণে, বিন্দুমাত্রও বুদ্ধি এদিক-ওদিক হলে সময় ব্যর্থ হবে।
উপার্জন হ্রাস পাবে । সতোপ্রধান হতে পারবে না । বাবা এও বুঝিয়েছেন, হাত দিয়ে কাজ করো
আর অন্তরে বাবাকে স্মরণ করো । শরীরকে ফ্রেশ রাখার জন্য ঘোরো, বেড়াও । কিন্তু
বুদ্ধিতে যেন বাবার স্মরণ চলে । যদি সাথে কেউ থাকে তবে পরচিন্তন কোরো না । এ তো
প্রত্যেকের অন্তর্মনই প্রমাণ দেবে । বাবা বুঝিয়ে বলেন, এমন স্থিতিতে স্থিত হয়ে ঘোরো
ফেরো । পাদ্রিরা সম্পূর্ণ শান্ত স্থিতিতে হেঁটে বেড়ায়। সম্পূর্ণ সময় ধরে তো জ্ঞানের
আলোচনা করবে না। সেইজন্য শিববাবার স্মরণে নিজেকে শান্ত রেখে রেস করা উচিত । যেমন
আহার গ্রহণ করার সময় বাবা বলে থাকেন ‐ স্মরণে বসে খাও, নিজের চার্ট দেখো । ব্রহ্মা
বাবা নিজের কথা বলেন যে, কীভাবে আমি ভুলে যেতাম । আমি চেষ্টা করি, বাবাকে বলি বাবা
আমি সম্পূর্ণ সময় স্মরণে থাকবো, তুমি আমার কাশি বন্ধ করে দাও, সুগার কম করো । নিজের
জন্য যে প্রচেষ্টা করেছি তাই তোমাদের বলছি । কিন্তু আমি নিজেই ভুলে যাই, সুতরাং কাশি
কীভাবে কমবে । যে সব কথা বাবার সাথে বলি, সে সব সত্যি কথা গুলিই তোমাদেরকে বলছি ।
বাবা, বাচ্চারা, তোমাদেরকে বলেন। কিন্তু বাচ্চারা বাবাকে বলে না। কারণ লজ্জা পায় ।
ঘর ঝাড় দাও, খাবার তৈরি করো, সবই শিববাবার স্মরণে করলে শক্তি বৃদ্ধি হবে । এই পদ্ধতি
খুব প্রয়োজন, এতে তোমাদেরই কল্যাণ হবে। তারপর তোমরা স্মরণে বসলে অন্যদেরও প্রচেষ্টা
থাকবে । একজনকে দেখে অন্যেরাও চেষ্টা করবে। যত তোমরা স্মরণে থাকবে ততই সাইলেন্সের
শক্তি ভালো হবে । ড্রামানুসারে একের প্রভাব অন্যের উপরে পড়বে । স্মরণের যাত্রা
অত্যন্ত কল্যাণকারী, এর মধ্যে মিথ্যা বলার প্রয়োজন নেই । বাবা হলেন সত্য, তাঁর
বাচ্চাদেরকেও সত্যের পথে চলতে হবে । বাচ্চারা তো সবকিছুই পায়, বিশ্বের বাদশাহী পেতে
চলেছো তোমরা। সেখানে লোভের বশীভূত হয়ে ১০-২০ টা শাড়ি ইত্যাদি কেন একত্রে জমা করছো ।
যদি অনেক জিনিস এইভাবে জমা করতে থাকো তবে মৃত্যুর সময় সে সবই স্মরণে আসবে। সেইজন্য
দৃষ্টান্ত আছে, তার স্ত্রী বলেছিল লাঠিও ছেড়ে দাও (অর্থাৎ সবকিছুই ত্যাগ, মোহমুক্ত
হওয়া) নয়তো এটার কথাও মনে পড়বে । অন্তিমে কোনও কিছুই স্মরণে আসা উচিত নয় । নয়তো
নিজের জন্য বিঘ্ন সৃষ্টি করবে । মিথ্যা বলার অপরাধে শতগুণ পাপ বৃদ্ধি পায়। শিববাবার
ভান্ডার সবসময় পরিপূর্ণ, বেশি রাখারও প্রয়োজন নেই । যার কিছু চুরি হয়ে যায় তাকে সব
দেওয়া হয় । তোমরা বাচ্চারা বাবার কাছ থেকে রাজধানী প্রাপ্ত করো, সেখানে পোশাক আশাক
কি পাবে না? শুধু শুধু অপ্রয়োজনীয় ভাবে পয়সা খরচ করা উচিত নয়। কেননা দরিদ্র অবলারাই
স্বর্গ স্থাপনার কাজে সহযোগ প্রদান করে । সুতরাং ওদের টাকা এইভাবে নষ্ট করা উচিত নয়
। ওরা তোমাদের দেখাশোনা করে, তোমাদেরও উচিত ওদের দেখাশোনা করা । নয়তো শতগুণ পাপ
মাথায় জমা হবে । আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার স্মরণে বসার সময় বুদ্ধি বিন্দুমাত্রও এদিক-ওদিক হওয়া উচিত নয় । সবসময় উপার্জন
জমা হতে হবে । এমনই স্মরণের স্থিতাবস্থা হবে যেন চারদিকে নিস্তব্ধ হয়ে যায় ।
২ ) শরীরকে সুস্থ
রাখার জন্য ঘুরতে, ফিরতে গেলে নিজেদের মধ্যে পরচিন্তন করা উচিত নয়। নিজেকে শান্ত
রেখে বাবার স্মরণে যেতে হবে। বাবার স্মরণে থেকে আহার করতে হবে।
বরদান:-
নিশ্চয়
বুদ্ধি হয়ে দুর্বল সংকল্পগুলির জালকে সমাপ্তকারী সফলতা সম্পন্ন ভব
এখনও পর্যন্ত মেজরিটি
(বেশীরভাগ) বাচ্চারা নিজেরাই দুর্বল সংকল্প ইমার্জ করে - চিন্তা করে, - জানিনা হবে
কি হবে না, কি হবে... এই দুর্বল সংকল্পই প্রাচীর হয়ে যায় আর সফলতা সেই প্রাচীরের
মধ্যে লুকিয়ে যায়। মায়া দুর্বল সংকল্পের জাল বিছিয়ে দেয়, আর তোমরা সেই জালে ফেঁসে
যাও ।এইজন্য ‘আমি হলাম নিশ্চবুদ্ধি বিজয়ী আত্মা, সফলতা হলো আমার জন্মসিদ্ধ অধিকার’
- এই স্মৃতির দ্বারা দুর্বল সংকল্পগুলিকে সমাপ্ত করো।
স্লোগান:-
তৃতীয়
অর্থাৎ জ্বালামুখী নেত্র খোলা থাকলে মায়া শক্তিহীন হয়ে যাবে।
Comments
Post a Comment