30-06-2024 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
30-03-20 মধুবন
"মনকে ঠিক রাখার জন্য মাঝে মাঝে অন্ততঃ ৫ সেকেন্ড
বের করে মনের এক্সারসাইজ করো"
আজ দূরদেশী বাপদাদা নিজের সাকার দুনিয়ার বিভিন্ন দেশবাসী বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে
এসেছেন। বাপদাদা ভিন্ন ভিন্ন দেশবাসীকে এক দেশবাসী রূপে দেখছেন। যে যে স্থান থেকেই
এসে থাকো না কেন, কিন্তু সবার আগে সবাই তোমরা একই দেশ থেকে এসেছো। তোমাদের নিজের
অনাদি দেশ স্মরণে আছে তো না! প্রিয় লাগে, তাই না! বাবার সাথে সাথে নিজেদের অনাদি
দেশও খুব প্রিয় লাগে, লাগে তো না!
বাপদাদা আজ সব বাচ্চার পাঁচ স্বরূপ দেখছেন, জানো তোমরা পাঁচ স্বরূপ কী কী? জানো তো
না! ৫ মুখী ব্রহ্মারও পূজন হয়। তো বাপদাদা সব বাচ্চার ৫ স্বরূপ দেখছেন।
প্রথম - অনাদি জ্যোতিবিন্দু স্বরূপ। মনে আছে না নিজের স্বরূপ? ভুলে যাও না তো?
দ্বিতীয় - আদি দেবতা স্বরূপ। পৌঁছে গেছো দেবতা স্বরূপে? তৃতীয় - মধ্য সময়ে পূজ্য
স্বরূপ, সেটাও মনে আছে তোমাদের? তোমাদের সবার পূজা হয় নাকি ভারতবাসীর পূজা হয়?
তোমাদের পূজা হয়? কুমার বলো তোমাদের পূজা হয়? তো তৃতীয় হলো - পূজ্য স্বরূপ। চতুর্থ
- সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ স্বরূপ আর লাস্টে ফরিস্তা স্বরূপ। তাহলে, পাঁচ রূপই স্মরণে এসে
গেছে? আচ্ছা এক সেকেন্ডে এই পাঁচ রূপেই নিজেকে অনুভব করতে পারো? ওয়ান, টু, থ্রি,
ফোর, ফাইভ ... তো করতে পারো! এই পাঁচ স্বরূপই কত প্রিয়! যখনই চাও, যে রূপে স্থিত হতে
চাও, ভাবার সাথে সাথে অনুভব করলে। এটাই অধ্যাত্ম মনের এক্সারসাইজ। আজকাল সবাই তোমরা
কী করো? এক্সারসাইজ করো তো না! যেমন আদিতেও তোমাদের দুনিয়ায় (সত্যযুগে) ন্যাচারালি
চলাফেরার এক্সারসাইজ ছিল। দাঁড়িয়ে ওয়ান, টু, থ্রি. ..এই এক্সারসাইজ নয়। তাইতো এখন
অন্তেও বাপদাদা মনের এক্সারসাইজ করান। স্থূল এক্সারসাইজে যেমন তনও ঠিক থাকে, তাই
না! সুতরাং চলতে ফিরতে মনের এই এক্সারসাইজ করতে থাকো। এর জন্য টাইমের প্রয়োজন নেই।
যখনই হোক পাঁচ সেকেন্ড বের করতে পারো, নাকি পারো না! এইরকম বিজি কেউ আছো যে পাঁচ
সেকেন্ডও বের করতে পারো না! আছে কেউ, তো হাত তোলো। আবার বলবে না তো কী করবো টাইমই
পাওয়া যায় না! এইরকম বলবেনা তো না! সময় পাও? তো এই এক্সারসাইজ মাঝে মাঝেই করো। কোনও
কাজে রয়েছো, পাঁচ সেকেন্ডের জন্য এইভাবে মনের এক্সারসাইজ করো। তাহলে মন সদা সুন্দর
থাকবে, ঠিক থাকবে। বাপদাদা তো বলেন - প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ সেকেন্ডের এই এক্সারসাইজ করো।
হতে পারে? দেখো, সবাই বলছো - হতে পারে। মনে রেখো। ওম্ শান্তি ভবন স্মরণে রেখো, ভুলো
না। তো মনের যে ভিন্ন ভিন্ন কমপ্লেন থাকে না যে - কী করবো মন বসে না! মনকে মণ বানিয়ে
দাও তোমরা। ওজন করে যেমন! আগের জামানায় পোয়া, সের আর মণ ছিল, আজকাল বদলে গেছে। তো
মনকে মণ তথা ভারী বানিয়ে দেয়, আর এই এক্সারসাইজ যদি করতে থাকো তবে একেবারে লাইট হয়ে
যাবে। অভ্যাস হয়ে যাবে। ব্রাহ্মণ শব্দ যদি স্মরণে আসে তবে ব্রাহ্মণ জীবনের অনুভবে
এসো। ফরিস্তা শব্দ যদি বলো তো ফরিস্তা হয়ে যাও। মুশকিল সেটা? নয়? কুমার বলো একটু
কী মুশকিল সেটা? তোমরা ফরিস্তা নাকি না? তোমরাই নাকি অন্য কেউ? কত বার ফরিস্তা হয়েছো?
অগণিত বার হওয়ার বিষয় রিপিট করা কী কঠিন হয়? কখনো কখনো হয়? এখন এই অভ্যাস করো।
যেখানেই থাকো পাঁচ সেকেন্ড মনকে ঘোরাও, পরিক্রমা করো। পরিক্রমা করতে তো ভালো লাগে,
তাই না! টিচার্স ঠিক আছে তো না! রাউন্ড লাগাতে তো পারবে, পারবে না? শুধু রাউন্ড
লাগাও আবার কর্মে লেগে যাও। প্রতি ঘণ্টায় রাউন্ড লাগাও তারপরে কাজে লেগে যাও। কেননা,
কাজ ছাড়তে তো পারবে না! ডিউটি তো প্লে করতে হবে। কিন্তু পাঁচ সেকেন্ড, মিনিটও নয়,
সেকেন্ড। বের করতে পারবে না? বের করতে পারবে? ইউ. এন. -এর অফিসে বের করতে পারবে?
মাস্টার সর্বশক্তিমান তোমরা। সুতরাং মাস্টার সর্বশক্তিমান কী না করতে পারে!
বাচ্চাদের একটা ব্যাপার দেখে বাপদাদা মিষ্টি মিষ্টি হাসেন। কোন ব্যাপারে? তোমরা
চ্যালেঞ্জ করো, প্রচার (পর্চা) পত্র ছাপাও, ভাষণ করো, কোর্স করাও। কী করাও? আমরা
বিশ্বকে পরিবর্তন করবো। এটাই সবাই বলে তো না! নাকি বলে না? সবাই বলে, নাকি যারা
ভাষণ দেয় তারা বলে? তাহলে, একদিকে বলো বিশ্ব পরিবর্তন করবো, মাস্টার সর্বশক্তিমান।
আরেক দিকে নিজের মনকে আমার মন বলো, মনের মালিক আর মাস্টার সর্বশক্তিমান। তবুও বলো
মুশকিল হয়? তাহলে হাসি আসবে না! আসবে না হাসি! সুতরাং যে সময় ভাবো, মন মানে না, সেই
সময় নিজের প্রতি হেসো। তোমাদের মনে যখন কোনও কিছু প্রবেশ করে তো বাপদাদা তিন রেখা
দেখেন যার গায়ন হয়েছে। এক, জলের উপরে রেখা। কখনো দেখেন জলের উপরে রেখা, এমন রেখা
টানার সাথে সাথে তৎক্ষণাৎ মুছে যাবে। এই রেখা টানো তো না! দুই, যে কোনও কাগজের উপর,
স্লেটের উপর রেখা টানা আর সবচাইতে বড় রেখা পাথরের উপরে টানা রেখা। পাথরের রেখা মুছে
ফেলা খুব কঠিন। তো বাপদাদা দেখেন যে অনেকবার বাচ্চারা নিজেরই মনের মধ্যে পাথরের
রেখার মতো মজবুত রেখা টেনে দেয়। যা মুছে দিলেও মুছে যায় না। এমন রেখা ভালো? কতবার
তোমরা প্রতিজ্ঞাও করো, এখন থেকে করবো না। এখন থেকে হবে না। কিন্তু বারবার পরবশ হয়ে
যাও। তার জন্য বাচ্চাদের প্রতি বাপদাদার ঘৃণা আসে না, করুণা হয়। পরবশ হয়ে যাও, তো
পরবশের প্রতি করুণাই আসে। যখন বাপদাদা এমন করুণা ভাব নিয়ে বাচ্চাদের দেখেন তখন
ড্রামার পর্দার উপরে কী আসে? কতদিন? সুতরাং এর উত্তর তোমরা দাও। কত সময় পর্যন্ত?
কুমার উত্তর দিতে পারো - কবে নাগাদ এটা সমাপ্ত হবে? অনেক প্ল্যান বানাও তো না কুমার
তোমরা! তাহলে কবে নাগাদ বলতে পারো? শেষ পর্যন্ত এটা কবে? বলো। উত্তর জানো তোমরা কবে?
দাদিরা বলো। (যতদিন সঙ্গমযুগ রয়েছে ততদিন অল্প অল্প থাকবে) সেটাও কত পর্যন্ত? (বাবা
বলবেন) ফরিস্তা তোমাদের হতে হবে নাকি বাবাকে? সুতরাং এর উত্তর ভেবো। বাবা তো বলবেন
এখন, তৈরি আছো তোমরা? অর্ধ-মালাতেও হাত তোলোনি।
বাপদাদা সদাই বাচ্চাদের সম্পন্ন স্বরূপে দেখতে চান। যখন বলেই থাকো, বাবাই আমার
সংসার। এটাই তো সবাই বলে থাকো, তাই না! দ্বিতীয় কোনও সংসার আর আছে কী? যদি বাবাই
সংসার হয়, তবে সংসারের বাইরে আর কী আছে? শুধু সংস্কার পরিবর্তন করার ব্যাপার।
তোমাদের ব্রাহ্মণ জীবনে বেশির ভাগ সময় বিঘ্ন রূপ হয় সংস্কার, হয় তা' নিজের সংস্কার
অথবা অন্যের সংস্কার। জ্ঞান সবার মধ্যে আছে, শক্তিও সবার কাছে আছে। কিন্তু বিঘ্নের
কারণ কী? যে শক্তি যে সময়ে কার্যে প্রয়োগ করা প্রয়োজন সেই শক্তি ইমার্জ হওয়ার
পরিবর্তে কিছু পরে ইমার্জ হয়। পরে তোমরা ভাবো যে এটা না বলে এটা যদি বলতাম তো খুব
ভালো হতো। কিন্তু যে সময় পাশ হওয়ার ছিল সেই পরিস্থিতি তো বেরিয়ে যায়, এমনকি তোমাদের
নিজের মধ্যে যে শক্তি আছে সেই সম্বন্ধে ভাবতেও থাকো, সহন শক্তি এটা, নির্ণয় শক্তি
এটা, তো সেভাবে ইউজ করা উচিত। শুধু অল্প সময়ের ব্যবধান হয়ে যায়। আরেকটা ব্যাপার কী
হয়? ঠিক আছে, একবার সময়মতো শক্তি কার্যে আসেনি এবং পরে অনুভবও করেছ যে এটা না করে
এটা করা উচিত ছিল। পরে উপলব্ধি করো। কিন্তু এই ভুলটা একবার অনুভব করার পরে
ভবিষ্যতের জন্য অনুভাবী হয়ে ভালো করে রিয়ালাইজ করে নাও, যাতে একই ভুল দ্বিতীয়বার না
হয়। তাহলেও প্রগ্রেস হতে পারে, সেই সময় তোমরা উপলব্ধি করতে পারো এটা রং, এটা রাইট।
কিন্তু একই ভুল দু'বার যেন না হয়, তার জন্য নিজেকে ভালো করে নিজের রিয়েলাইজেশন করতে
হবে। তা'তেও তোমাদের ফুল পার্সেন্ট পাস হয় না। তাছাড়া, মায়া খুব চতুর, মনে করো সেই
একই পরিস্থিতি আর তোমাদের মধ্যে সহন শক্তি কম আছে, তো সেই পরিস্থিতিতে তোমাদের সহন
শক্তি ইউজ করতে হবে, একবার তোমরা রিয়েলাইজ করে নিয়েছো, কিন্তু মায়া কী করে,
দ্বিতীয়বারে সে একটুখানি রূপ বদল করে আসে। পরিস্থিতি সেই একই কিন্তু যেভাবে
আজকালকার জামানায় পুরানো জিনিস অথচ এমন পালিশ করে দেয় নতুনের থেকেও নতুন মনে হয়,
ঠিক একইরকমভাবে, মায়াও এমন পালিশ করে আসে যে পরিস্থিতির রহস্য একই থাকে, মনে করো
তোমরা ঈর্ষান্বিত হয়ে গেলে। ঈর্ষাও ভিন্ন ভিন্ন রূপের হয়, একরূপের হয় না। সুতরাং
বীজ ঈর্ষারই হবে কিন্তু আসবে আরেক রূপে। তোমরা অনেক সময়ই ভাবো, এই ব্যাপারটা আগে
যেটা হয়েছিল সেরকম ছিল না, এই ব্যাপারটাই অন্যরকম তো না! কিন্তু বীজ সেই একই, শুধু
রূপ পরিবর্তন হয়ে যায়। তার জন্য তোমাদের কোন্ শক্তি প্রয়োজন? - 'পরখ করার শক্তি।'
এইজন্য বাপদাদা প্রথমেই বলেছিলেন, দু'টো বিষয়ে অ্যাটেনশন রাখো। এক- সত্য হৃদয়।
সত্যতা। নিজের মধ্যে কিছু লুকিয়ে রেখো না। যখন তোমরা নিজের মধ্যে রাখো গ্যাস ভরা
বেলুন হয়ে যায় আর পরিশেষে কী হবে? ফেটে যাবে তো না! অতএব, সত্য হৃদয় বজায় রাখো। ঠিক
আছে, অন্য আত্মাদের সামনে হয়তো সঙ্কোচ হয়, একটু লজ্জা লাগে, চিন্তা করো, জানি না কী
নজরে আমাকে দেখবে! যেমনই হোক, প্রকৃত হৃদয়ের সাথে, অনুভবের সাথে বাপদাদার সামনে রাখো।
এভাবে নয় - আমি বাপদাদাকে বলে দিয়েছি, এই ভুল হয়ে গেছে। যেমন তোমরা অর্ডার ইস্যু করো
না যে, হ্যাঁ, আমি এই ভুল করেছি। সেই রকম ভাবে নয় । অনুভবের শক্তির দ্বারা, সত্য
হৃদয়ের সাথে, শুধু মস্তক দ্বারা নয়, বরং হৃদয় দিয়ে যদি বাপদাদার সামনে উপলন্ধি করো
তবে হৃদয় সেই আবর্জনা থেকে খালি হয়ে যাবে। জঞ্জাল শেষ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি বড় হয়
না, ছোটই হয়। কিন্তু যদি তোমাদের হৃদয়ে ছোট ছোট বিষয়গুলো একত্রিত হতে থাকে তাহলে
সেগুলোতে হৃদয় ভরে যায়। খালি তো থাকে না, তাই না! তাহলে, হৃদয় যদি খালি নয় তবে
দিলারাম কোথায় বসবেন! বসার জায়গা থাকতে হবে তো না! তো সত্য হৃদয়ে প্রভু প্রসন্ন। আমি
যা, আমি যেরকম, বাবা আমি তোমার। বাপদাদা তো জানেনই যে নম্বরক্রম তো হওয়ারই আছে।
সেইজন্য বাপদাদা সেই দৃষ্টিতে তোমাদের দেখবেন না। কিন্তু সত্য হৃদয় আর দ্বিতীয়তঃ
বলেছিলাম - বুদ্ধির লাইন সদা ক্লিয়ার থাকতে হবে। লাইনে ডিস্টার্বেন্স যেন না হয়,
কাট অফ যেন না হয়। বাপদাদা সময়মতো যে এক্সট্রা শক্তি দিতে চান, আশীর্বাদ দিতে চান,
এক্সট্রা সহায়তা দিতে চান, যদি ডিস্টার্বেন্স থাকবে তো সেসব প্রাপ্ত হবে না। লাইনই
ক্লিয়ার নেই, ক্লিন নেই, কাট অফ হয়ে আছে, তাহলে এই যে প্রাপ্তি হওয়া উচিত তা' হয়
না। কিছু বাচ্চা বলে, না বললেও ভাবে যে - কোনো কোনো আত্মার অনেক সহযোগ প্রাপ্ত হয়,
ব্রাহ্মণদের থেকেও প্রাপ্তি হয়, বড়দের থেকেও প্রাপ্তি হয়, বাপদাদার থেকেও প্রাপ্তি
হয়, শুধু আমাদেরই কম প্রাপ্তি হয়। কারণ কী? বাবা তো দাতা, সাগর, যে যত নিতে চায় নিতে
পারে, তালাচাবি নেই, পাহারাদার নেই বাপদাদার ভান্ডারে। বাবা বলার সাথে সাথে জী
হাজির (তিনি উপস্থিত)। বাবা বলেন - নাও। তিনি দাতা তো না! তিনি দাতাও, সাগরও। তাহলে
তাঁর কী কম হতে পারে? এই দুটো ব্যাপারেই খামতি থাকে। এক হলো সত্য হৃদয়, স্বচ্ছ হৃদয়
হবে, চাতুরী করবে না। তোমরা অনেক চাতুরী করে থাকো। ভিন্ন ভিন্ন রকমের চাতুরী করো।
সুতরাং, নির্মল হৃদয়, সত্য হৃদয় আর তোমাদের বুদ্ধির লাইন সদা চেক করো ক্লিয়ার এবং
ক্লিন আছে কিনা। আজকালকার সায়েন্সের সাধনেও তো তোমরা দেখতে পাও যে, যদি সামান্যতম
ডিস্টার্বেন্সও থাকে তবে ক্লিয়ার হতে দেয় না। অতএব, এটা অবশ্যই করো।
আরো একটা বিশেষ বিষয় হলো - এটাই তো এই সিজনের লাস্ট টার্ন তাই না, সেইজন্য বাবা
তোমাদের বলছেন। এটা শুধু ডবল ফরেনারদের জন্য নয়, বরং সকলের জন্য। লাস্ট টার্নে
তোমরাই বাবার সামনে বসে আছো, তাইতো তোমাদেরই বলতে হচ্ছে । বাপদাদা দেখেছেন এখনো একটা
সংস্কার অথবা বলতে পারো নেচার রয়েছে। নেচার তো প্রত্যেকের নিজস্ব কিন্তু সকলের
স্নেহী এবং সর্ব বিষয়ে, সম্বন্ধে সফল, মন্সাতে বিজয়ী এবং বাণীতে মধুরতা আসবে তখনই
ইজি নেচার হবে। অসতর্ক মূলক নেচার নয়। অসতর্কতা আলাদা ব্যাপার। ইজি নেচার তাকেই বলা
যায় - যেমন সময়, যেমন ব্যক্তি, যেমন সারকমস্ট্যান্স সেটা বুঝে পরখ করাই নিজেকে ইজি
করে দেওয়া। ইজি অর্থাৎ সহজে মেনে নেওয়া। টু-মাচ অফিসিয়াল হওয়ার টাইট নেচার নয়,
অফিসিয়াল থাকা ভালো কিন্তু টু-মাচ নয়। তাছাড়া তেমন সময়ে কেউ যদি অফিসিয়াল হয়ে যায়
তখন সেই সময়ে সেটা তার বিশেষ গুণ বলে মনে হয় না। ছোট হও বা বড় হও নিজেকে যেন মোল্ড
করতে পারো, সবকিছু সহজে মানিয়ে নিতে পারো। বড়দের সাথে তাদের মতন করে চলা উচিত আর
ছোটদের সাথে ছোটদের মতন। সাথীদের সাথে সাথী হয়ে যেন চলতে পারো, বড়দের প্রতি রিগার্ড
বজায় রেখে যেন চলতে পারো। যেন ইজি মোল্ড করতে পারো, কিছু লোক তাদের শরীরও ইজি রাখে
তো না, যাতে যখন ইচ্ছা তখনই তারা ঘোরাতে পারে আর টাইট হলে ঘোরাতে পারে না। তোমাদের
অসতর্ক হওয়াও উচিত নয়। এটা এমন নয় যে তোমরা ইজি যদি হও তো যেখানে চাইবে ইজি হয়ে যাবে,
আসাবধান হয়ে যাবে। না। এটা বোলো না যে বাপদাদা বলেছেন ইজি হয়ে যাও তো ইজি হয়ে গেলে,
এমন ক'রো না। ইজি নেচার অর্থাৎ সময় অনুসারে যেন নিজের স্বরূপ বানাতে পারো। আচ্ছা -
ডবল বিদেশিরা ভালো চান্স পেয়েছে।
সবার ড্রিল স্মরণে আছে নাকি ভুলে গেছো? এখনই এখনই এই ড্রিল করো। পরিক্রমা করো। আচ্ছা।
চতুর্দিকের সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মাদের, চতুর্দিক থেকে যারা স্মরণের স্নেহ-সুমন, সমাচার
পাঠিয়েছে তাদেরকে এবং যারা তাদের বিভিন্ন সম্বন্ধের খুব ভালো স্নেহপত্র এবং নিজেদের
অবস্থান সম্বন্ধে লিখেছে, সেবার সমাচার, উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং খুব ভালো ভালো প্ল্যান
লিখেছে, তা' বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে। ভালোবাসার সাথে, পরিশ্রমের সাথে যারাই লিখেছে
তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের নামে বাপদাদার, দিলারামের হৃদয়ের স্মরণের স্নেহ-সুমন
স্বীকার করো। বাবার প্রতি বাচ্চাদের ভালোবাসা আর তার চেয়েও পদ্মগুণ বেশি ভালোবাসা
বাচ্চাদের প্রতি বাবার এবং সদা অমর। স্নেহী বাচ্চারা না বাবার থেকে আলাদা হতে পারে,
না বাবা বাচ্চাদের থেকে আলাদা হতে পারেন। সাথে আছেন, আর সদা সাথেই থাকবেন।
চতুর্দিকের যারা নিজেকে সদা বাবা সমান বানায়, সদা বাবার নয়নে, হৃদয়ে এবং মস্তকে
সমীপে থাকে, সদা এক বাবার সংসারে থাকে, সদা প্রতি কদমে বাপদাদাকে ফলো করে, সদা বিজয়ী
ছিল, বিজয়ী আছে এবং বিজয়ী থাকবে - এমন নিশ্চয় আর নেশায় যারা থাকে, এমন অতি হারানিধি,
প্ৰিয় থেকে প্রিয় সব বাচ্চাকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
প্রতিটি সেকেন্ডের প্রতিটি সংকল্পের মহত্ত্ব জেনে
সঞ্চয়ের খাতা পরিপূর্ণ করে সমর্থ আত্মা ভব
সঙ্গমযুগে অবিনাশী বাবার দ্বারা সব সময় অবিনাশী
প্রাপ্তি হয়। সারা কল্পে এমন ভাগ্য প্রাপ্ত করার এটাই একটা সময় - সেইজন্য তোমাদের
স্লোগান হলো "এখন নয় তো কখনো নয়।" যে শ্রেষ্ঠ কার্য করতে হবে তা এখনই করতে হবে।
এই স্মৃতির দ্বারা কখনো সময়, সংকল্প কিংবা কর্ম ব্যর্থতে খুইয়ে দিও না, সমর্থ
সংকল্পের দ্বারা সঞ্চয়ের খাতা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে আর আত্মা সমর্থ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
প্রতিটি বোল, প্রতিটি কর্মের অলৌকিকতাই হলো পবিত্রতা,
সাধারণকে অলৌকিকতায় পরিবর্তন করে দাও।
Comments
Post a Comment